Friday, April 17, 2015
টিএসসির সেই নির্মম ঘটনার বর্ণনা : সন্তানের সামনে মাকে করা হয় লাঞ্ছিত, বিবশ্র স্ত্রীর ইজ্জত বাঁচাতে জড়িয়ে ধরে থাকেন স্বামী
ডেস্ক রিপোর্ট
« আগের সংবাদ | পরের সংবাদ» |
পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণের দিনে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসি এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে কয়েক নারীকে বিবশ্র করে শ্লীলতাহানীর সেই ঘটনা ছিল এক কথায় ভয়াবহ।
সেখানে এক শিশুর সামনেই বখাটেদের হাতে তার মা যৌন হয়রানির শিকার হয়। এ সময় ওই নারী হাতজোড় করে তার সঙ্গে তার সন্তান রয়েছে বলে মানুষরূপী ওই নরপিশাচদের কাছ থেকে বাঁচতে পারেননি।
এর কাছে শত শত মানুষের ভিড়ের প্রকাশ্যে ববিশ্র করে আরেক নারীর শ্লীলতাহানী ঘটায় হায়েনার দল। এ সময় স্ত্রীর ইজ্জত বাঁচাতে তার স্বামী তাকে জড়িয়ে ধরে ছিলেন।
নতুন বছরকে উদযাপন করতে গিয়ে প্রকাশশ্য দিবালোকে শত শত মানুষের সামনেই এভাবেই নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র টিএসসি এলাকায়।
এ সব ঘটনা ঘটে তখন কাছেই পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু সব দেখেও কিছুই করার ছিল না যেন তাদের।
টিএসসি এলাকার ওই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার ঢাবির সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্র-শিক্ষক জনতার সংহতি সমাবেশে এ সব ঘটনার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি লিটন নন্দী।
সমাবেশে তিনি বলেন, ‘সাড়ে ৬টার দিকে ১৭-১৮ বছরের একটি মেয়ের জামাকাপড় ছেঁড়া হয়। আমি তখন প্রতিরোধ করতে করতে দুর্বল হয়ে পড়ে যাই। তখন লাথি, কিল, ঘুষি আর পায়ের পাড়া আমার ওপর পড়ে। সে সময় ওই মেয়েটা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আমি তখন ওই হায়েনাদের উদ্দেশ্যে বলি- ভাই দয়া করে মেয়েটাকে মেরে ফেলেন না।’
ওই দিন প্রতিটা জায়গাতেই নারীদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ করে তিনি বলেন, একজন মহিলা বারবার বলছিলেন, তার শিশু সঙ্গে আছে। তাকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই শিশুটির সামনেই ওই মাকে লাঞ্ছিত করা হয়।
লিটন নন্দী বলেন, ওই দিন সাড়ে ৫টার একটু পরে আমিসহ ছাত্র ইউনিয়নের চার নেতা-কর্মী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটে জনস্রোতে গিয়ে দেখি, যুবকদের দুই থেকে তিনটা দল উদ্যানের দিকের গেটটা বন্ধ করে রেখেছে। সেখানে বিভিন্নভাবে নারীদের হেনস্তা করা হচ্ছে। আমরা তখন দুই হাত উঁচু করে করিডর বানিয়ে নারীদের বের করতে থাকি।
'সোয়া ৬টার দিকে ভিড়ের ভেতর একজন নারীর চিৎকার শুনি। দৌড়ে গিয়ে মানুষরূপী হায়েনাদের দৃশ্য দেখি। এ দৃশ্য সভ্য ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। ২৬-২৭ বছরের একজন নারী প্রায় বিবস্ত্র। তাঁর স্বামী তাঁকে জড়িয়ে ধরে আছেন। এরপর আমার গায়ে পরা এ পাঞ্জাবিটা খুলে তাঁর শরীর ঢেকে দেই। তখন ওই হায়েনার দল ওই পাঞ্জাবিও খুলে নেওয়ার চেষ্টা করে' বললেন লিটন নন্দী।
এ সময় পুলিশ সদস্যরা একেবারেই নিস্ক্রিয় ছিল অভিযোগ করে ছাত্র ইউনিয়নের এ নেতা বলেন, এই ন্যক্কারজনক হামলা চলার সময় মাত্র দুজন পুলিশ সোহরাওয়ার্দীর গেটে ছিলেন। আর কিছু পুলিশ সদস্য মিলন চত্বরে ছিলেন। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আমরা এভাবে হায়েনাদের প্রতিরোধ করতে থাকি। পুলিশরা এ সময় একেবারেই নিষ্ক্রিয় ছিল।
লিটন আরো বলেন, ‘সাড়ে ৬টার দিকে ১৭-১৮ বছরের একটি মেয়ের জামাকাপড় ছেঁড়া হয়। আমি তখন প্রতিরোধ করতে গেলে লাথি, কিল, ঘুষি আর পায়ের পাড়া আমার ওপর পড়ে। সে সময় ওই মেয়েটা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যৌন হেনস্তাকারীতে সহযোগী হিসেবে ভূমিকা রাখছে বলে অভিযোগ করে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেমন খুনিদের রক্ষা করে, তেমনিভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অপরাধীদের রক্ষায় কাজ করে।
‘মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকলে হবে না। বর্ষবরণে নারী লাঞ্ছনার দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে' বলেও একই সঙ্গে মন্তব্য করেন আনু মুহাম্মদ।
সভায় প্রক্টরের অপসারণ, দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও বিচার, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নসহ ছয় দফা দাবিও তুলে ধরা হয়।
সমাবেশে অন্যান্যের মাঝে বক্তৃতা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রাজীব মীর, ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসান তারেক, সাধারণ সম্পাদক লাকী আক্তার, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদপ্রার্থী আবদুল্লাহ আল ক্বাফী, সাংবাদিক সুপ্রীতি ধর, সংগীতশিল্পী সায়ান, বিপ্লবী নারী সংহতির সমন্বয়ক শ্যামলী শীল প্রমুখ।
সেখানে এক শিশুর সামনেই বখাটেদের হাতে তার মা যৌন হয়রানির শিকার হয়। এ সময় ওই নারী হাতজোড় করে তার সঙ্গে তার সন্তান রয়েছে বলে মানুষরূপী ওই নরপিশাচদের কাছ থেকে বাঁচতে পারেননি।
এর কাছে শত শত মানুষের ভিড়ের প্রকাশ্যে ববিশ্র করে আরেক নারীর শ্লীলতাহানী ঘটায় হায়েনার দল। এ সময় স্ত্রীর ইজ্জত বাঁচাতে তার স্বামী তাকে জড়িয়ে ধরে ছিলেন।
নতুন বছরকে উদযাপন করতে গিয়ে প্রকাশশ্য দিবালোকে শত শত মানুষের সামনেই এভাবেই নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র টিএসসি এলাকায়।
এ সব ঘটনা ঘটে তখন কাছেই পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু সব দেখেও কিছুই করার ছিল না যেন তাদের।
টিএসসি এলাকার ওই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার ঢাবির সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্র-শিক্ষক জনতার সংহতি সমাবেশে এ সব ঘটনার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি লিটন নন্দী।
সমাবেশে তিনি বলেন, ‘সাড়ে ৬টার দিকে ১৭-১৮ বছরের একটি মেয়ের জামাকাপড় ছেঁড়া হয়। আমি তখন প্রতিরোধ করতে করতে দুর্বল হয়ে পড়ে যাই। তখন লাথি, কিল, ঘুষি আর পায়ের পাড়া আমার ওপর পড়ে। সে সময় ওই মেয়েটা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আমি তখন ওই হায়েনাদের উদ্দেশ্যে বলি- ভাই দয়া করে মেয়েটাকে মেরে ফেলেন না।’
ওই দিন প্রতিটা জায়গাতেই নারীদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ করে তিনি বলেন, একজন মহিলা বারবার বলছিলেন, তার শিশু সঙ্গে আছে। তাকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই শিশুটির সামনেই ওই মাকে লাঞ্ছিত করা হয়।
লিটন নন্দী বলেন, ওই দিন সাড়ে ৫টার একটু পরে আমিসহ ছাত্র ইউনিয়নের চার নেতা-কর্মী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটে জনস্রোতে গিয়ে দেখি, যুবকদের দুই থেকে তিনটা দল উদ্যানের দিকের গেটটা বন্ধ করে রেখেছে। সেখানে বিভিন্নভাবে নারীদের হেনস্তা করা হচ্ছে। আমরা তখন দুই হাত উঁচু করে করিডর বানিয়ে নারীদের বের করতে থাকি।
'সোয়া ৬টার দিকে ভিড়ের ভেতর একজন নারীর চিৎকার শুনি। দৌড়ে গিয়ে মানুষরূপী হায়েনাদের দৃশ্য দেখি। এ দৃশ্য সভ্য ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। ২৬-২৭ বছরের একজন নারী প্রায় বিবস্ত্র। তাঁর স্বামী তাঁকে জড়িয়ে ধরে আছেন। এরপর আমার গায়ে পরা এ পাঞ্জাবিটা খুলে তাঁর শরীর ঢেকে দেই। তখন ওই হায়েনার দল ওই পাঞ্জাবিও খুলে নেওয়ার চেষ্টা করে' বললেন লিটন নন্দী।
এ সময় পুলিশ সদস্যরা একেবারেই নিস্ক্রিয় ছিল অভিযোগ করে ছাত্র ইউনিয়নের এ নেতা বলেন, এই ন্যক্কারজনক হামলা চলার সময় মাত্র দুজন পুলিশ সোহরাওয়ার্দীর গেটে ছিলেন। আর কিছু পুলিশ সদস্য মিলন চত্বরে ছিলেন। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আমরা এভাবে হায়েনাদের প্রতিরোধ করতে থাকি। পুলিশরা এ সময় একেবারেই নিষ্ক্রিয় ছিল।
লিটন আরো বলেন, ‘সাড়ে ৬টার দিকে ১৭-১৮ বছরের একটি মেয়ের জামাকাপড় ছেঁড়া হয়। আমি তখন প্রতিরোধ করতে গেলে লাথি, কিল, ঘুষি আর পায়ের পাড়া আমার ওপর পড়ে। সে সময় ওই মেয়েটা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যৌন হেনস্তাকারীতে সহযোগী হিসেবে ভূমিকা রাখছে বলে অভিযোগ করে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেমন খুনিদের রক্ষা করে, তেমনিভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অপরাধীদের রক্ষায় কাজ করে।
‘মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকলে হবে না। বর্ষবরণে নারী লাঞ্ছনার দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে' বলেও একই সঙ্গে মন্তব্য করেন আনু মুহাম্মদ।
সভায় প্রক্টরের অপসারণ, দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও বিচার, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নসহ ছয় দফা দাবিও তুলে ধরা হয়।
সমাবেশে অন্যান্যের মাঝে বক্তৃতা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রাজীব মীর, ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসান তারেক, সাধারণ সম্পাদক লাকী আক্তার, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদপ্রার্থী আবদুল্লাহ আল ক্বাফী, সাংবাদিক সুপ্রীতি ধর, সংগীতশিল্পী সায়ান, বিপ্লবী নারী সংহতির সমন্বয়ক শ্যামলী শীল প্রমুখ।
Subscribe to:
Posts (Atom)