Thursday, January 10, 2013

চাইল্ড বার্থ আউটসোর্সিং এবং মহানবী (সাঃ) এর বিস্ময়কর হাদিস

চাইল্ড বার্থ আউটসোর্সিং এবং মহানবী (সাঃ) এর বিস্ময়কর হাদিস

মুসলিম শরীফের হাদিস অনুসারে মহানবী (সাঃ) বলেছেন যে, কিয়ামতের অন্যতম আলামত হলো - দাসীর গর্ভে মুনিবের জন্মদান । মহানবী (সাঃ) এর এই কথাটি অনেক আলেমই বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন । কেউ বলেছেন যে, একজন স্বাধীন ব্যক্তির দাসী থেকে সন্তান জন্মদান এবং পরে সে সন্তান স্বাধীন হলেও মাতা তখনও দাসী রয়ে গেছে । এভাবে দাসী মনিবের জন্ম দিতে পারে ।

কেউ কেউ বলেছেন যে, দাসীরা রাজকুমার জন্ম দেবে । রাজকুমার বড় হয়ে রাজা হলে মাতা তার প্রজার অর্ন্তভুক্ত হয়ে যাবে ।

অনেকেই বলেছেন যে, শেষ যমানায় ছেলেরা মায়ের সাথে দাস দাসীর মত আচরণ করবে । ইত্যাদি ।

কিন্তু আমার মনে হয় মহানবী (সাঃ) এর এই হাদিসটি বর্তমানে প্রচলিত চাইল্ড আউটসোর্সিং এর সাথে সর্বাপেক্ষা বেশী মিলে যায় উপরোক্ত সব ব্যাখ্যা থেকে । কেয়ামতের নিদর্শন মানে শেষ যমানার অবস্হা বলা হয়েছে । আর এই শেষ যমানায় দাস প্রথা বিলুপ্ত , মানুষ দাসী রাখেনা । কিন্তু মানুষ পূর্বে যা চিন্তা করেনি বর্তমানে তাই হচ্ছে । উন্নত বিশ্বের লোকজন তাদের স্পার্ম দিয়ে অনুন্নত বিশ্বের মহিলাদের গর্ভ ভাড়া করে তাদের সন্তান জন্মদান করিয়ে নিচ্ছে ।

বিভিন্ন কারণে তা হচ্ছে , যেমন- সমাকিমতার প্রসার, অনুর্বরতা, স্বাস্হ্যগত সমস্যা এবং সন্তান জন্মদানের মত কষ্ট করতে না চাওয়া । সব মিলিয়ে উন্নত বিশ্ব তথা ব্রিটেন, আমেরিকা এবং ইংল্যান্ড এর ধনীরা টাকার বিনিময়ে অনুন্নত বিশ্ব তথা ভারত থেকে গরীব মহিলাদের গর্ভে তাদের শিশুদের জন্ম দান করছে । অল্প কিছুদিন আগেও আমরা কল্পনা করতে পারতাম না যে আরেক জনের গর্ভে টাকার বিনিময়ে সন্তানের জন্ম । কিন্তু বর্তমানে তাই হচ্ছে এবং এটা ব্যপকহারে বিস্তার লাভ করছে । আজকের আমাদের সময় পত্রিকায় একজন বাংলাদেশী ডাক্তার তা বাংলাদেশে চালু করার জন্য বলেছেন । এটা নাকি এদেশের জন্য প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের উৎস হবে । যাক, সেটা ভিন্ন কথা ।



মহানবী (সাঃ) বাণী এ বিষয়টা ছাড়া আর কোনটার সাথে এত সুন্দর ভাবে মিলে যায় না । নিম্নে পুরো হাদীসটা দেয়া হলোঃ

'আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমার পিতা উমর ইবনে আব্দুল খাত্তাব (রাঃ) হাদিস শুনিয়েছেন যে, একদা আমরা রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর খিদমতে ছিলাম । এমন সময় একজন লোক আমাদের কাছে এসে হাযির হলেন । তার পরিধানে কাপড় ছিলো ধবধবে, মাথার কেশ ছিলো কালো কুচকুচে । তার মধ্যে সফরের কোন চিহ্ন ছিলো না । আমরা কেউ তাকে চিনি না । তিনি নিজের দুই হাটু নবী করিম (সাঃ) এর দুই হাটুর সাথে লাগিয়ে বসে পড়লেন আর দুই হাত নবী করিম (সাঃ) এর দুই উরুর উপর রাখলেন । তারপর তিনি বললেন, হে মুহাম্মদ ! আমাকে ইসলাম সম্পর্কে অবহিত করুন । রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ ইসলাম হলো, তুমি একথার সাক্ষ্য প্রদান করবে যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল, নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে, রমযানের রোযা পালন করবে এবং বায়তুল্লাহ পৈাছার সামর্থ্য থাকলে হজ্জ্ব পালন করবে । আগন্তক বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন । তার কথা শুনে আমরা বিম্মিত হলাম যে, তিনি প্রশ্ন করছেন আর তিনিই তা সত্যায়িত করছেন । আগন্তুক বললেন, আমাকে ঈমান সম্পর্কে অবহিত করুন । রাসূল (সাঃ) বললেনঃ ঈমান হলো আল্লাহর প্রতি, তার ফেরেশ্তাদের প্রতি, তার কিতাব সমূহের প্রতি, তার রসূলগণের প্রতি এবং আখিরাতের প্রতি ঈমান আনবে আর তকদীরের ভালো-মন্দের প্রতি ঈমান রাখবে । আগন্তুক বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন । তারপর বললেন, আমাকে ইহসান সম্পর্কে অবহিত করুন । রাসূল (সাঃ) বললেনঃ ইহসান হলো, এমনভাবে ইবাদত-বন্দেগী করবে যেন তুমি আল্লাহকে দেখছ, যদি তুমি তাকে নাও দেখ, তাহলে ভাববে তিনি তো আমাকে দেখছেন । আগন্তুক বললেন, আমাকে কিয়ামত সম্পর্কে অবহিত করুন । রাসূল (সাঃ) বললেনঃ এ বিষয়ে প্রশ্নকারীর চাইতে যাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে তিনি অধিক অবহিত নন । আগন্তুক বললেন, আমাকে এর আলামত সম্পর্কে অবহিত করুন । রাসূল (সাঃ) বললেনঃ তা হলো এই যে, দাসী তার প্রভুর জননী হবে অর্থাৎ দাসী তার প্রভুকে জন্ম দিবে ; আর নগ্নপদ , বিবস্ত্র দেহ মেষ পালকদের বিরাট বিরাট অট্রালিকার প্রতিযোগিতায় গর্বিত দেখতে পাবে । উমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) বললেন যে, পরে আগন্তুক প্রস্হান করলেন । আমি বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম । তারপর রাসূল (সাঃ) আমাকে বললেন, হে উমর ! তুমি জান, এই প্রশ্নকারী কে ? আমি আরয করলাম, আল্লাহ ও তার রাসূল-ই সম্যক জ্ঞাত আছেন । রাসূল (সাঃ) বললেনঃ তিনি জিব্রাঈল । তোমাদের তিনি দ্বীন শিক্ষা দিতে এসেছিলেন । (মুসলিম)

কিয়ামতের দ্বিতীয় আলামত যেটা এখানে বলা হয়েছে , সেটা যে আরবদের সম্পর্কে বলা হয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নাই এবং সেটাও ইতিমধ্যে সত্যিতে পরিণত হয়েছে । মধ্যপ্রাচ্যের দিকে তাকালে তা সহজেই বুঝা যায় ।

সুতরাং কেয়ামত সম্পর্কিত মহানবী (সাঃ) অপর বাণীগুলোও যে সত্যে পরিণত হবে তাতেও কোন সন্দেহ নাই । বিশ্বের চলমান ঘটনাগুলো যেন ধীরে ধীরে বিশ্বকে কেয়ামতের দিকেই নিয়ে যাচ্ছে । আল্লাহ আমাদের এই ফেতনার যুগে ঈমানকে ঠিক রাখার তৈাফিক দান করুন ।

No comments:

Post a Comment