Sunday, February 17, 2013

‘ক্ষমতার পালাবদল ঘটলেও সম্পর্ক পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই’

‘ক্ষমতার পালাবদল ঘটলেও সম্পর্ক পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই’
সোমবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩
কূটনৈতিক রিপোর্টার: দু’দিনের সফর শেষে ঢাকা ছাড়ার আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সলমন খুরশিদ বললেন, বাংলাদেশ কিংবা ভারত যেখানেই ক্ষমতার পালাবদল ঘটুক না কেন তাতে দু’দেশের সম্পর্কে কোন পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা নেই। তিনি নিজেকে আশাবাদী মানুষ দাবি করে বলেন, দু’দেশের সম্পর্ক এখন আর কোন বিশেষ দল বা জোটের গণ্ডির মধ্যে নেই। তা জনগণের পর্যায়ে। এ সম্পর্কের ভিত্তি এখন অনেক মজবুত। গতকাল সন্ধ্যায় হোটেল রূপসী বাংলায় জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে অপর এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আ বলেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে তা রাজনৈতিক দলগুলোই আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করবে। দিল্লি আশাবাদী সবার অংশগ্রহণে এখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন ছিল, নির্বাচনের ল্যান্ড বাউন্ডারি এগ্রিমেন্টের রেটিফিকেশন আর তিস্তা চুক্তি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনায় বিরোধী জোট বা বিএনপি চেয়ারপারসনের মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করেছেন কিনা? জবাবে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে সলমন খুরশিদ বলেন, বিষয় দু’টি নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ জন আকাঙক্ষা রয়েছে। তিস্তা আর ল্যান্ড বাউন্ডারির রেটিফিকেশন হলে বিএনপি নেত্রী খুশি হবেন বলেই মনে হয়েছে তার। শাহবাগ আন্দোলন সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এর গতি প্রকৃতি কোনদিকে যাবে তা কেউই আঁচ করতে পারছেন না। তবে আমি তরুণদের যে স্লোগান আর উচ্ছ্বাস দেখেছি তাতে মনে হয়েছে তারা একটি আদর্শের পেছনে রয়েছে। সীমান্ত হত্যা বিশেষ করে নিরীহ কিশোরী ফেলানী হত্যার তদন্তের অগ্রগতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সলমন খুরশীদ বলেন, সীমান্তে যে কোন হত্যায় তিনি বরাবরই উদ্বিগ্ন। এটা যে কোনভাবে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার আশ্বাস দেন তিনি। ফেলানীর বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, হত্যাকারীর অবশ্যই শাস্তি হবে। টিপাইমুখ বাঁধসহ ভারতের সঙ্গে সব অমীমাংসিত ইস্যু বিসয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের উজানে কোন বাঁধ বা ড্যাম নির্মাণ করে ভারত এ দেশের কোন ক্ষতি করবে না। এ নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই।
সীমান্ত হত্যা ও চোরাচালান বন্ধের খালেদার আহ্বান: সফররত ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সলমন খুরশিদকে সীমান্ত হত্যা ও চোরাচালান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতকাল বিকালে তার গুলশানের বাসভবনে এক বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি। প্রায় সোয়া ঘণ্টার বৈঠক শেষে এ কথা বলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সলমন খুরশিদ বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। বৈঠকে খালেদা জিয়া বাংলাদেশের সীমান্তে হত্যা অব্যাহত থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করলে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোঠায় না আসায় ভারত সরকারও অসন্তুষ্ট। এ সমস্যা সমাধানে ভারত সরকারের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া তিস্তা চুক্তি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি শমসের মবিন বলেন, খালেদা জিয়া মাদকসহ চোরাচালান বন্ধের আহ্বান জানালে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঐকমত হন। এছাড়া বিরোধী নেতা খালেদা জিয়া বিএনপির আগামী ১৯শে মার্চের কাউন্সিলে ভারতের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের অংশগ্রহণের জন্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আহ্বান জানান। বৈঠক শেষে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে। আমি সার্কভুক্ত দেশগুলোতে ধারাবাহিক সফর করবো। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সফরে এসেছি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশে এটা আমার প্রথম সফর।  বৈঠকে সীমান্ত সমস্যা, তিস্তা চুক্তি নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রয়েছে। ভারত সরকার এই সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বজায় রাখার জন্য বিরোধী দলের ভূমিকা রয়েছে। এই গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সরকার দলের সঙ্গে বিরোধী দলের আলাপ-আলোচনা করে সমাধান বের করতে হবে। বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে বৈঠকে কোন এজেন্ডা ছিল কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন এজেন্ডা ছিল না। বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতেই এসেছিলাম।

No comments:

Post a Comment