Saturday, January 26, 2013

কর্মক্ষেত্রে ধর্মীয় পোশাক পরার পক্ষে রায়


সমাজ জীবন

কর্মক্ষেত্রে ধর্মীয় পোশাক পরার পক্ষে রায়

অফিস আদালতে ধর্মীয় পোশাক কোনো সমস্যা হতে পারে না – এমন মতের পক্ষে রায় দিয়েছে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত৷ তবে সঙ্গে এ-ও জানিয়েছে, স্বাধীনতা ততক্ষণ পর্যন্তই সমর্থনযোগ্য, যতক্ষণ না সেটা অন্য কারো অধিকার খর্ব করছে৷
ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের একটি রায় নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে৷ বিশেষ করে ইউরোপে অবস্থানরত অভিবাসী, যাঁরা ধর্মচর্চার অংশ হিসেবে স্কার্ফে মাথা ঢেকে বা মাথায় পাগড়ি পরে অফিসে যেতে চান তাঁরা বুঝতে চাইছেন এ রায়ের বিশেষত্ব৷ রায়ে আসলে একদিকে যেমন সব ধর্মাবলম্বীকে ধর্মবিশ্বাস থেকে পোশাক নির্বাচনের অধিকার দেয়া হয়েছে, তেমনি আবার মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে অন্যের প্রতি অবিচার না করার বিষয়টিকে সব সময় গুরুত্ব দেয়ার কথাও বলা হয়েছে খুব জোর দিয়ে৷
© Darrin Henry - Fotolia.comজার্মানির বর্তমান আইন অনুযায়ী অন্য কারো অনুভূতিতে কোনো আঘাত না করলে, কারো জন্য কোনো শঙ্কার জন্ম না দিলে কর্মক্ষেত্রে পোশাক নির্বাচনে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই
রায়ের শেষ কথা – ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো নিজ নিজ পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে, সংশ্লিষ্ট অভিযোগে বাদি-বিবাদির ভালো-মন্দ বিচার করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে৷ এ সময় ব্রিটেনের খ্রীষ্টানদের করা চারটি মামলার একটির পক্ষে এবং বাকি তিনটির বিরুদ্ধে রায় দেয় ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত৷ ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের এক খ্রীষ্টান কর্মী কাজের সময় ‘ক্রস' পরতে চাইলে তাঁকে কাজ করার সুযোগ না দিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিল ওই বিমান সংস্থার নিয়োগকর্তারা৷ আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, যেহেতু কর্মীটির ওই ‘ক্রস' পরা অন্য কাউকে কোনোভাবে আঘাত করছে না সে কারণে তাঁকে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে৷
ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের রায়ে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন খুশি৷ এক টুইটার বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, ‘‘কর্মক্ষেত্রে ধর্মীয় পোশাক পরার অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়ায় আমি আনন্দিত, ধর্মবিশ্বাসের কারণে কোনো মানুষের বৈষম্যের স্বীকার হওয়া উচিত নয়৷''
জার্মানিতে সেই আশঙ্কা এমনিতেও নেই৷ জার্মানির বর্তমান আইন অনুযায়ী অন্য কারো অনুভূতিতে কোনো আঘাত না করলে, কারো জন্য কোনো শঙ্কার জন্ম না দিলে কর্মক্ষেত্রে পোশাক নির্বাচনে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই৷ ফ্রাঙ্কফুর্টের গ্যোটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্ম বিষয়ের বিশেষজ্ঞ টমাস এম স্মিট তাই মনে করছেন ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের রায় জার্মানিতে বর্তমানে কার্যকর আইনে ব্যাপক কোনো পরিবর্তনে বাধ্য করবে না৷ ইউরোপের একেক দেশের একেক রকমের বাস্তবতার প্রেক্ষিতে দেশভেদে আইন প্রয়োগে কিছুটা স্বাধীনতা রাখার বিষয়টিরও প্রশংসাই করেছেন তিনি৷

No comments:

Post a Comment