Friday, December 7, 2012

রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত

উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজনীতির মাঠ। ইস্যু ভিন্ন হলেও সব দলই নিজ নিজ কর্মকাণ্ড নিয়ে সক্রিয় রাজপথে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচনের দাবিতে এবং গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনে বাধা প্রদানের প্রতিবাদে আন্দোলন করছে বিরোধী দল। আর সরকারি দল রাজপথে সক্রিয় আছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি কার্যকর ও বিরোধী দলের আন্দোলন ঠেকাতে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এরই মধ্যে মাঠপর্যায়ে নানা কর্মসূচি পালন করতে শুরু করেছে। ২৮ ডিসেম্বর ঢাকার নয়াপল্টনে বিশাল সমাবেশ করে দলটি পুরো ডিসেম্বর মাসব্যাপী কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রাজপথ অবরোধের মতো কর্মসূচিও রয়েছে। কাল ৯ ডিসেম্বর কর্মসূচি পালন করা হবে সারাদেশে। বিএনপির পাশাপাশি এদিন সব মহানগর-জেলা-উপজেলা-থানায় রাজপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে ১৮ দলীয় জোটও। এ কর্মসূচি নিয়ে এরই মধ্যে সরকারের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সরকারবিরোধী জোটের রাজপথ অবরোধ কর্মসূচি মোকাবিলায় ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে। তবে জোটনেত্রী খালেদা জিয়া ঘোষণা করেছেন, কর্মসূচিতে বাধা দিলে লাগাতার হরতালসহ সর্বাত্মক কর্মসূচি দেয়া হবে।
১৮ দলীয় জোটের আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে গণসংযোগ কর্মসূচিও চলবে। ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় এ কর্মসূচিতে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া নিজেই থাকবেন। ২৩ ডিসেম্বর সারাদেশে পালন করবে বিক্ষোভ ও গণমিছিল কর্মসূচি। বিএনপির একটি সূত্র জানায়, ডিসেম্বর মাসজুড়ে মাঠ গরম করে জানুয়ারি মাসে সর্বশক্তি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে তারা মাঠে নামবে। ডিসেম্বরের কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরই তারা এক দফার আন্দোলন শুরু করবে। আর এ আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে হরতাল-অবরোধের মতো কঠিন এবং টানা কর্মসূচি আসতে পারে।
এদিকে অপর বিরোধী দল জামায়াতে ইসলামীকে মাঠেই নামতে দিচ্ছে না সরকার। যেখানে জামায়াত-শিবির সেখানেই হামলে পড়ছে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। এ দলটির আমির ও সেক্রেটারি জেনারেলসহ শত শত নেতাকর্মীকে কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে বন্দি করে রাখা হয়েছে। রাজপথে আন্দোলন করতে না পেরে তারা এখন অঘোষিত কর্মসূচি পালন করছে। দীর্ঘদিন পর গত
সোমবার তারা প্রকাশ্য কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পুলিশ ও সরকারি দল তাদের রাস্তায়ই নামতে দেয়নি। বিভিন্ন স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করে তাদের সমাবেশ পণ্ড করে দেয়া হয়েছে। দিনাজপুরে শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি করে শিবিরের এক কর্মীকে হত্যা করেছে পুলিশ। এমন পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার জামায়াত সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে। ৪ ডিসেম্বরের হরতালেও জামায়াত-শিবিরকে মাঠে নামতে দেয়নি পুলিশ ও সরকারি দলের ক্যাডাররা। যেখানেই হরতালের সমর্থনে মিছিল বের হয়েছে সেখানেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে পুলিশ ও সরকারি দলের ঠেঙ্গারে বাহিনী। হরতাল সমর্থকরাও হামলার জবাব দিয়েছে। প্রকাশ্যে রাস্তায় নামতে না পেরে কোথাও কোথাও চোরাগোপ্তা হামলাও করেছে তারা। জামায়াত নেতারা বলেছেন, গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনে বাধা এবং দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ করা না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি দেবে।
ইসলামী ঐক্যজোটও নানা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী ২১ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে তারা। ওইদিন ইসলামী এ জোটটি সরকারবিরোধী আন্দোলনের জোরাল কর্মসূচি দেবে বলে জানা গেছে।
কর্নেল (অব.) অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-এলডিপি গত শনিবার বিকালে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ত্রিবার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন করেছে। উদ্বোধনী বক্তৃতায় এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধে যেমন আমরা সর্বাত্মক লড়াই করেছি, এবার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের শত্রু বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের পতনের লক্ষ্যে সর্বাত্মক লড়াইয়ে নামতে হবে। ৯ ডিসেম্বরের অবরোধ কর্মসূচির মাধ্যমে এ লড়াই শুরু হচ্ছে বলে উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের যথাযথ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
কল্যাণ পার্টি মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় দলটির নেতারা বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা না হলে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবেন। এদিকে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিস, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাপ, ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-এনডিপি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ,বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি, ন্যাপ-ভাসানী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ডেমোক্র্যাটিক লীগ, বাংলাদেশ পিপলস লীগ প্রধান বিরোধীদল বিএনপির সঙ্গে জোটবেঁধে অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলন করছে। বাম রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলন করছে তেল-গ্যাসসহ খনিজ সম্পদ মার্কিনিদের হাতে তুলে দেয়ার ষড়যন্ত্র ও গার্মেন্ট শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি, নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে, বিদ্যুত্, গ্যাস ও পানি সঙ্কট নিরসনের দাবিতে।
মহাজোট সরকারের অন্যতম শরিক দল জাতীয় পার্টিও সভা-সমাবেশ করে জনমত নিজেদের পক্ষে নিতে সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনামূলক বক্তব্য দিচ্ছে। জাপা চেয়ারম্যান এরশাদ বৃহস্পতিবার এক সভায় বলেছেন, সময় হলেই তিনি মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দেবেন।
বিরোধী জোটের কাছে এখন আন্দোলনের প্রধান ইস্যু হলো নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল এবং বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা প্রদান। এছাড়াও রয়েছে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির নায়কদের শাস্তি না দিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান, হলমার্কের ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় সরকারি দলের বেশ কয়েকজনের নাম জড়িয়ে পড়া, পদ্মা সেতুর ঘুষ কেলেঙ্কারির সঙ্গে শুধু সাবেক যোগাযোগমন্ত্রীই নয়, আরও অনেক রাঘব-বোয়াল জড়িত থাকার গুজব, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ঘুষ কেলেঙ্কারি, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম, খুন, বিনা বিচারে হত্যা, রেলের ভাড়া, তেলের দামসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সীমাহীন মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুত্ ও গ্যাস সঙ্কট ইত্যাদি।
আর সরকারের হাতে থাকা কর্মসূচির মধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যু অন্যতম। দেশের রাজনীতিকে এ ইস্যুতে তারা উত্তপ্ত করতে চায়। শুধু তাই-ই নয়, জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি বন্ধ করে দেয়ারও কথা বলছেন সরকারি দলের কোনো কোনো নেতা। ফলে জামায়াত-শিবির বনাম পুলিশ-আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে।
সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের পাল্টা হামলার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। অপরদিকে জামায়াত-শিবিরও আত্মরক্ষায় পুলিশের ওপর হামলা চালানো শুরু করেছে। যদিও জামায়াত-শিবির এ হামলার কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। জামায়াত-শিবির এবং সরকারবিরোধী যে কোনো আন্দোলন রুখে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গত শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, এখন থেকে বিরোধী দলের অগণতান্ত্রিক দাবি প্রতিরোধ করা হবে। কোনো ছাড় দেয়া হবে না। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, দেশের জনগণকে নিয়ে আমরা রাজপথে জামায়াত-শিবিরকে প্রতিহত করব এবং এদের যারা আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে গণজোয়ার সৃষ্টি করব। দেশে কোনো নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না।
এদিকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াতের শীর্ষ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে রায় ডিসেম্বর মাসে ঘোষণা হতে পারে। আর এটি যদি ঘটতে যায় সেক্ষেত্রে জামায়াত-শিবির মরিয়া হয়ে মরণ কামড় দিতে পারে।
আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে, ডিসেম্বর মাসে কয়েকজন শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর রায় ঘোষণা করা হতে পারে। সে সময় জামায়াত-শিবির যাতে কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক অবস্থানে। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড থেকে তৃণমূলে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অপরদিকে সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে এবং রাজধানীতে যে কোনো ধরনের সরকারবিরোধী আন্দোলন প্রতিহত করা যায় সেজন্য পার্শ্ববর্তী জেলার সংগঠনের নেতাকর্মীদের ঢাকায় এনে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এদিকে সরকারের নেপথ্য অনুরোধে এরই মধ্যে সিপিবিসহ বাম রাজনৈতিক দলগুলোও মাঠে নামছে। তারা জামায়াত ইস্যুতে আন্দোলনে নামছে। এরই মধ্যে সিপিবি, বাসদ এবং বামমোর্চ ১৮ ডিসেম্বর দেশব্যাপী হরতাল ডেকেছে। অন্যান্য বামদলকেও এর সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুতে অগ্নিগর্ভ হতে পারে রাজপথ : আগামী জাতীয় নির্বাচন কোন ধরনের সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে সে বিতর্কে সরকার ও বিরোধী দলের পাল্টাপাল্টি আক্রমণাত্মক বক্তব্যে পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে। সরকার চাইছে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, দলীয় সরকারের অধীনেই অর্থাত্ তাদের অধীনেই নির্বাচন হবে। সেভাবেই নির্বাচন করতে বিরোধী দলকে প্রস্তুতি নিতে হবে।
বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবির বিষয়ে গত ২৯ মার্চ জাতীয় সংসদে দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক বিষয়ে হাইকোর্টের রায় ছিল। সংসদের মাধ্যমে আমরা সেই রায় কার্যকর করেছি। কাজেই বিরোধী দল হাইকোর্টের রায় না মানলে কিছু বলার নেই। এরপর ১৯ সেপ্টেম্বর সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি এও বলেছেন, বর্তমান দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। যখন সময় আসবে তখন আমি রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করে বলব- আমরা এই সময়ে নির্বাচন করতে চাই। তখন রাষ্ট্রপতি যে নির্দেশ দেবেন সে অনুযায়ীই নির্বাচন হবে। নির্বাচনের সময় ছোট মন্ত্রিসভা থাকবে জানিয়ে তিনি বলেছেন, নির্বাচনের সময় কত সদস্যের কেবিনেট থাকবে সেটিই ঠিক করবেন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতিই সময়মত সংসদ ভেঙে দেবেন। এটি রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। রাষ্ট্রপতির নির্দেশ মোতাবেক একটি তারিখ নির্ধারণ করে নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন।
অপরদিকে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি বলছে, কোনো হুমকি-ধমকি দিয়ে কাজ হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। দলীয় সরকারের অধীনে তারা নির্বাচনে যাবে না এবং নির্বাচন হতেও দেবে না। তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে রাজপথের কঠোর আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারকে বিদায় করা হবে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে অনড় রয়েছেন। ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পর থেকে এ ইস্যুতে আন্দোলন করছে বিএনপি। এরই মধ্যে এই দাবিতে বিএনপি ৬টি হরতাল করেছে। গত বছরের ৫ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পরিকল্পনার প্রতিবাদে বিএনপি হরতাল করে। এরপর জুনের ১২ ও ১৩ তারিখ ৩৬ ঘণ্টা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে ৬, ৭, ৮ জুলাই-৪৮ ঘণ্টার লাগাতার হরতাল পালন করেছে। বেগম খালেদা জিয়া ৬ বিভাগে রোড মার্চ করেছেন। দাবি আদায়ে গণমিছিল-গণঅনশন, রোডমার্চ-সমাবেশ-গণসংযোগ করেছে। সর্বশেষ পর্যায়ে বেগম খালেদা জিয়া চূড়ান্ত আন্দোলনের পরিকল্পনা করছেন। আগামী বছরের শুরু থেকে হরতাল-অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে বলে গত ২৮ নভেম্বর ঢাকার জনসভা থেকে ঘোষণা দিয়েছেন। রাজপথে দাবি জানানোর পাশাপাশি কূটনৈতিক চ্যানেলে জোরালো লবিং করছেন বিএনপি নেতারা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করা না করার ইস্যুতেই রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন চরম উত্তেজনার দিকে ধাবিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া প্রায় অন্য সব দলই এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের পক্ষে। সরকার যদি একগুঁয়েমী ছেড়ে বিরোধী জোটের দাবি মেনে না নেয় তাহলে রাজপথ অগ্নিগর্ভ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

No comments:

Post a Comment