Thursday, December 27, 2012

২০১২ সালে বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি

বিজ্ঞান প্রযুক্তি

২০১২ সালে বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি

চলে যাচ্ছে ২০১২৷ এ বছরে বাংলাদেশের একদল বিজ্ঞানী ছত্রাকের জীবনরহস্য উন্মোচন করেছেন৷ এছাড়া বছরজুড়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে নেয়া হয়েছে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ৷
দু বছর আগে পাটের জীবনরহস্য উন্মোচন করেছিলেন জিন বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলম ও তাঁর দল৷ এবার তাঁদের সাফল্য এসেছে ছত্রাকের জীবনরহস্য উন্মোচনে৷ পাটসহ প্রায় ৫০০টি উদ্ভিদের অন্যতম শত্রু হলো এই ছত্রাক৷ এটা কীভাবে ফসলের জৈব উপাদান নষ্ট করে, উৎপাদন কমিয়ে দেয়, বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা সেই রহস্য বের করেছেন৷
তথ্য প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার বলছেন, ২০১২ সালে বাংলাদেশের বিজ্ঞান জগতে সবচেয়ে বড় ঘটনা ছত্রাকের এই জীবনরহস্য আবিষ্কার৷ তিনি মনে করেন, সরকার সহায়তা করলে যে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা অনেক কিছু করতে পারে এটা তারই একটা প্রমাণ৷
বিজয় সফটওয়্যারের উদ্ভাবক মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০১২ সাল থেকে স্কুল ও মাদ্রাসাগুলোর ষষ্ঠ শ্রেণিতে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়টি পড়ানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷ ২০১৩ থেকে সপ্তম শ্রেণিতে এবং তারপর থেকে ক্রমান্বয়ে শেষ পর্যন্ত সব শ্রেণিতে তথ্য প্রযুক্তি পড়ানো হবে৷ তিনি বলেন, এটা খুবই বড় একটা ঘটনা, কেননা এর ফলে একটা কম্পিউটার-শিক্ষিত জাতি গড়ে তোলা সম্ভব হবে৷
ওষুধ নিয়ে মৌলিক গবেষণা করতে হবে, নইলে ২০১৬’র পর জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম বেড়ে যাবে
২০১২ সালে বিশ হাজার পাঁচশ' স্কুলে একটি করে ‘মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম' গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে সরকার৷ ওই ক্লাসরুম বা শ্রেণিকক্ষে থাকবে একটি প্রজেক্টর আর একটি ল্যাপটপ৷ এগুলো ব্যবহারের উপযোগী শিক্ষা উপকরণ তৈরির কাজও চলছে বলে জানান মোস্তাফা জব্বার৷
তিনি বলেন, সায়েন্স ল্যাবরেটরির আওতায় প্রয়োজনীয় কিছু বিষয়ে গবেষণা করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অল্প হলেও কিছু তহবিলের ব্যবস্থা করা হয়েছে, এটা ভাল খবর৷
তবে থ্রি-জি প্রযুক্তি চালুর ক্ষেত্রে জব্বারের কিছুটা ক্ষোভ রয়েছে৷ তিনি বলেন, ২০১২ সালে পরীক্ষামূলকভাবে থ্রি-জি প্রযুক্তি চালু করা হলো, অথচ ২০০৯-১০ সালেই সেটা পরিপূর্ণভাবে শুরু হওয়ার কথা ছিল৷
এ তো গেল ২০১২ সালের কথা৷ মোস্তাফা জব্বারের কাছে ভবিষ্যতের কিছু বিষয়েও জানতে চেয়েছিলাম৷ জিজ্ঞেস করেছিলাম, ভবিষ্যতে কোন বিষয়গুলোর প্রতি বেশি নজর দেয়া উচিত৷ তিনি বললেন, ‘‘বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন কৃষিখাতে বেশি বেশি গবেষণা করা, কেননা, দিন দিন খাদ্যের চাহিদা বাড়ছে৷ সেটা মেটাতে বাড়াতে হবে খাদ্যের উৎপাদন৷ সীমিত জমি ব্যবহার করে কিভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায় সেটা খুঁজে বের করতে হবে৷ এরপর নজর দিতে হবে শিল্প গবেষণায়, বিশেষ করে ওষুধ শিল্পের দিকে, কেননা ২০১৬ সালের পর যখন রয়্যালটি দিয়ে ওষুধ তৈরি করতে হবে তখন দেখা যাবে জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম বেড়ে যাচ্ছে দুইগুন, তিনগুন৷''
জব্বার বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে গবেষণার দিকেও সরকারের খেয়াল রাখা উচিত৷ এর জন্য যে বেশি বেশি টাকা খরচ করতে হবে তা নয়, মেধাবী তরুণদের কিছুটা সুযোগ করে দিলেই চলবে বলে মনে করেন তিনি৷ জব্বার বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে মৌলিক কাজ খুব একটা হচ্ছে না বাংলাদেশে৷ শুধু বিদেশ থেকে পণ্য এনে বিক্রি করা হচ্ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘তথ্য প্রযুক্তি খাতের জন্য একটা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এবং সেখানে মৌলিক কাজের সুযোগ রাখতে হবে৷''

No comments:

Post a Comment