Monday, December 3, 2012

বাংলাদেশের বানিজ্যের জন্য বেলারুশ এক উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র

 বাংলাদেশের বানিজ্যের জন্য বেলারুশ এক উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র

উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক গভীর করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

 সৈয়দ তাশহিন চৌধুরী

ডিসেম্বর 04, 2012
 
বাংলাদেশ সরকার বেলারুশের সাথে উভয়ের জন্য লাভজনক একটি বন্ধুত্বের প্রত্যাশা করছে যা বেলারুশের প্রতিবেশি কাজাখস্থান এবং রাশিয়াতে ক্রমবর্ধমান প্রবেশাধিকারসহ বেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণেরবানিজ্য সুবিধা আনতে পারে।
  • বেলারুশ সরকার ঢাকায় অনুষ্ঠিত নভেম্বরের বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে শুল্কমুক্ত পণ্যসুবিধাযুক্ত বাজারের ব্যাপারে কথা দিয়েছে, এটি এমন একটি উদ্যোগ যা এদেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে অন্যান্য পোশাক রপ্তানিকারকদের সাথে ২০১০ এর মিনস্ক-এর পণ্য বাজারের বেলারুশেরর এই নারীর মত ক্রেতাদের  মধ্যে ব্যবসার ক্ষেত্রে ভাল একটি সুযোগ করে দিবে ।   [ভিক্টর দ্রচেভ/এ এফ পি] বেলারুশ সরকার ঢাকায় অনুষ্ঠিত নভেম্বরের বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে শুল্কমুক্ত পণ্যসুবিধাযুক্ত বাজারের ব্যাপারে কথা দিয়েছে, এটি এমন একটি উদ্যোগ যা এদেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে অন্যান্য পোশাক রপ্তানিকারকদের সাথে ২০১০ এর মিনস্ক-এর পণ্য বাজারের বেলারুশেরর এই নারীর মত ক্রেতাদের মধ্যে ব্যবসার ক্ষেত্রে ভাল একটি সুযোগ করে দিবে । [ভিক্টর দ্রচেভ/এ এফ পি]

১২ই নভেম্বরের বেলারুশের প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিয়াস্নিকোভিচ এবং তার বাংলাদেশের প্রতিপক্ষের সাথে বৈঠকে-তার অপরপক্ষ শেখ হাসিনাকে সম্ভাব্য সহযোগিতার লক্ষ্যে তার ঢাকার অফিসে উভয়পক্ষ বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। তারা বিজ্ঞান, ম্যানুফ্যাকচারিং, সামরিক প্রকৌশল এবং শিক্ষার বিষয়গুলিতে সহযগিতার ব্যাপারে অঙ্গীকার করেন।
এর আগের দিন, মিনস্ক ঢাকাকে কথা দেয় যে বাংলাদেশ শীঘ্রই বেলারুশে শুল্কমুক্ত বাজার প্রবেশাধিকার পাবে-যার মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানির উপর থেকে ২০-২৫% শুল্ক প্রত্যাহার করা হবে এবং উভয় অর্থনীতির ক্ষেত্রে সংকীর্ণ এবং কষ্টদায়ক বানিজ্য ঘাটতিকে সম্ভাব্য সহায়তা দিবে।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফ বি সি সি আই)-এর তথ্য মতে, বেলারুশ ২০১১-১২ অর্থবছরে বাংলাদেশে ৮৭ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে , অন্যদিকে, একইসময়ে বাংলাদেশের তা মাত্র ২ দশমিক ৪২ মিলিয়ন ডলার।
শুল্ক প্রত্যাহার বেলারুশের শুল্ক অংশীদার কাজাখস্থান এবং রাশিয়া পর্যন্তও বিস্তৃত হতে পারে, যদি তারা তা অনুমোদন দেয়।
বানিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ খবর সাউথ এশিয়াকে বলেন, “রাশিয়া, বেলারুশ এবং কাজাখস্থান একটি অভিন্ন শুল্ক ইউনিয়নের সদস্য এবং বাংলাদেশি পণ্য এই বাজারগুলিতে প্রবেশ করতে পারে যখন বেলারুশ শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদান করবে”। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে মস্কো এবং আসতানা এ উদ্যোগের ব্যাপারে সম্মত হবে।
“বেলারুশের প্রধানমন্ত্রী এটি ইতিমধ্যে বাংলাদেশের কাছে ঘোষনা দিয়েছে। আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে এটি এখন শুধু সময়ের ব্যাপার”, তিনি যোগ করে বলেন।
একটি বিশাল বাজার
কাজাখস্থান এবং বিশেষকরে রাশিয়াতে শুল্ক প্রত্যাহার বাংলাদেশের রপ্তানির ক্ষেত্রে এক বিশাল সুযোগ হতে পারে, বিশেষ করে তৈরি পোশাকখাতে, যা ২০১১-২০১২ অর্থবছরে দেশের রপ্তানি আয়ের ৮০%, মার্কিন ডলারে মোট ২৪ দশমিক ২৮ বিলিয়ন।
ঢাকার নিকটবর্তী ফতুল্লার এম-বি নীট ফ্যাশন-এর মালিক মোহাম্মদ আলী বর্ণনা করেন যে কিভাবে তৈরি পোশাক খাত লাভবান হতে পারে। আলী, যিনি ৭০০ জনেরও অধিক শ্রমিককে কাজ দিয়েছেন, তিনি সেপ্টেম্বরের ২৪ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চারদিনব্যাপী চলা রাশিয়ার বানিজ্যমেলায় অংশগ্রহণ করেন।
“আমরা ১০মিলিয়ন ডলারের তাৎক্ষনিক কাজের নির্দেশ পেয়েছি ঐ চারদিনে”, আলী খবরকে বলেন। “আমাদের মধ্যে একজন সারা বছরের জন্য ৭ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি লাভ করেছেন”। তিনি হিসাব করেছেন যে, বেলারুশ, রাশিয়া এবং কাজাখস্থানের সামগ্রিক বস্ত্র বাজার বছরে ১০ বিলিয়ন ডলারের।
নতুন বানিজ্য অংশীদার
বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারস এ্যান্ড এক্সপোরটারস এসোসিয়েশন (বি জি এম ই এ)-এর সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বাংলাদেশের রপ্তানি ক্ষেত্রে এক ব্যাপক উৎসাহব্যঞ্জক ঘটনা মনে করে বেলারুশের সাথে গাঢ় হওয়া সম্পর্ককে স্বাগত জানান।
তিনি বলেন, “বানিজ্যের পরিমাণ এখন বাড়বে, এ চুক্তির পর”।
“বেলারুশ কৃষি এবং খনিজ সম্পদের ক্ষেত্রে উন্নত”, মহিউদ্দিন বলেন। “তারা কৃষিক্ষেত্রে বেশকিছু শ্রেষ্ঠ যন্ত্রপাতি এবং ট্রাক তৈরি করে থাকে যা বাংলাদেশ আমদানি করতে পারে তার কৃষিক্ষেত্রের জন্যও”।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)-এর নির্বাহী পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাম্প্রতিক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক নতুন বিনিয়োগের পথ তৈরি করতে যাচ্ছে। “চুক্তির পর”, রহমান খবরকে বলেন। “বেলারুশ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে এবং এখানে উৎপাদিত পণ্য প্রতিবেশী ভারত এবং অন্যান্য গন্তব্যে রপ্তানি করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, বেলারুশের মত পরিবর্তিত অর্থনীতিকে প্রধান বাজার হিসাবে দৃষ্টি দেয়া বাংলাদেশের জন্যও জরুরি। যেমনভাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ই-ইউ বৈশ্বিক মন্দার ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
“বাংলাদেশের পশ্চিম এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির সাথে ঐতিহ্যগতভাবে যোগাযোগ রয়েছে। কিন্তু, আমাদের জন্য এখন উঠতি অর্থনৈতিক শক্তিগুলির সাথে সম্পর্ক তৈরি করা ভাল অদূর ভবিষ্যতের লাভের কথা চিন্তা করে”, তিনি বলেন।

No comments:

Post a Comment