তুরস্কের বাংলাদেশে আইসিটি কার্যক্রম পরিদর্শন নিয়ে প্রশ্ন
সর্বশেষ আপডেট মঙ্গলবার, 25 ডিসেম্বর, 2012 17:00 GMT 23:00 বাংলাদেশ সময়
তুরস্কের কয়েকজন রাজনীতিক
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম পরিদর্শনে যাওয়ার
পর তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ।
তুরস্কের এই প্রতিনিধিদল গতকাল সোমবার ঢাকায়
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কার্যক্রম সরেজমিনে দেখতে যান, এছাড়া তারা এই
আদালতে ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে কথা বলেন বিভিন্ন
মহলের সঙ্গে।তুরস্কের দলটি পাঁচদিন ধরে ঢাকায় ছিল।
এই সফরে তারা বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী ,প্রধানন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা এবং বিরোধীদলের শীর্ষ পর্যায়ের একজন নেতার সাথে বৈঠক করেছেন। এছাড়া ঢাকায় মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শনের পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্যানেল এবং অভিযুক্তের পক্ষের আইনজীবীদের সাথেও বৈঠক করেছে তুরস্কের এই দল।
"তুরস্কের দলের কাছে, আমি পরিস্কার করে বলেছি যে , লবিষ্ট নিয়োগ করা হয়েছে। যারা অভিযুক্ত হচ্ছে, বিদেশে তারা অনেক টাকা পয়সা খরচ করছে। "
শফিক আহমেদ, বাংলাদেশ আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেছেন, তাঁর সাথে বৈঠকে তুরস্কের এই দলের সদস্যরা নিজেদের আইনজীবী হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল। তিনি পরে জানতে পারেন, এরমধ্যে তুরস্কের ক্ষমতাসীন একে দল বা মুসলিম ব্রাদারহুডের একজন এমপি ছিলেন এবং ওই দেশের সাবেক একজন প্রতিমন্ত্রী ও আরও দু’টি রাজনৈতিক দলের সদস্যও ওই দলে ছিলেন।
আইনমন্ত্রী বলছিলেন, ‘তুরস্কের দলের কাছে, আমি পরিস্কার করে বলেছি যে , লবিষ্ট নিয়োগ করা হয়েছে। যারা অভিযুক্ত হচ্ছে, বিদেশে তারা অনেক টাকা পয়সা খরচ করছে। কাজেই তাদের তারা প্রভাবিত হয়ে বিদেশ থেকে কেউ এখানে এসে এই বিচার নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করতে চায়। সেটা আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের সামিল হবে।’
আইনমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূতও উপস্থিত ছিলেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শনের ক্ষেত্রেও তুরস্কের ঐ দলের সদস্যরা নিজেদের একটি আইনজীবী সংগঠনের সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। তারা তাদের আইনজীবী ফোরামের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের কথাও বলেছিলেন।
"ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে আইনগত কোন বাধা নেই। বিচার যে স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষভাবে ও প্রকাশ্যে হচ্ছে, সেটা তুলে ধরতেই এমন নীতি রাখা হয়েছে।"
একেএম নাসিরউদ্দিন মাহমুদ, ট্রাইব্যুনাল রেজিস্ট্রার
এর আগে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শন করেছে বলে বলা হচ্ছে।
তবে স্কাইপ কথোপকথন ফাঁস হওয়ার পটভূমিতে ট্রাইব্যুনালের একজন বিচারপতি সরে যাওয়ার পর অল্প সময়ের ব্যবধানে তুরস্কের দলটি ঢাকায় এসেছিল। ফলে যথাযথ ভিসা বা অনুমতি না থাকলেও বিদেশে কোন বিতর্ক এড়াতে তুরস্কের দলকে ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলে আইনজীবী প্যানেলের একজন সদস্য জানিয়েছেন।
আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪০ বছরেরও বেশি সময় পরে এই বিচার কেন করা হচ্ছে- এই বিচার নিরপেক্ষভাবে হচ্ছে কীনা - এসব প্রশ্ন নিয়ে এসেছিল তুরস্কের দলটি। সব প্রশ্নেরই জবাব পরিস্কারভাবে তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন মন্ত্রী।
তিনি আরও বলেছেন, ‘এই বিচার সম্পর্কে তারা কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এসেছিল বলে মনে হয়েছে। তাদের এই সফরের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হলেও বিষয়গুলো আমরা তুলে ধরছি। আমি বলেছি, রাজনৈতিক কোন কারণে নয়। তদন্তে যাদের ব্যাপারে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরই বিচার করা হচ্ছে।’
ঢাকায় তুরস্কের দূতাবাসের পক্ষ থেকে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিষয়টাতে তুরস্কের দূতাবাসের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হতে পারে।
No comments:
Post a Comment